শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬

কম্পিউটার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নতুনদের জন্য


যারা নতুন কম্পিউটার শিখতে চান তারা এখান থেকে পড়া শুরু করুণ।
আমরা ভেবেছি অনেক নতুন ভাইয়েরা আছে যারা নতুন পিসি কিনেছে এবং নতুন ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করেছে তাই তারা অনেক কিছুই যানে না, আমরা যা যানি তারা এ থেকে অনেক পিছিয়ে আছে তাই তাদেরও আমাদের সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের এই উদ্যেগ, তাই আমরা বাংলা টিউটোরিয়াল ধারাবাহিক ভাবে সবার সাথে শেয়ার করতে চাই এক এক পর্বে এক একটা কাজ নিয়ে আলোচনা হবে। তাহলে আজ পরম করুনাময় আল্লাহ্ এর নামে  শুভ উদ্বোধন করলাম, “প্রথম পর্ব” প্রথম পর্বে যা থাকছে।
০১- কম্পিউটার কি?
০২- কম্পিউটারের ইতিহাস।
০৩- কি ভাবে কম্পিউটার কাজ করে?
০৪- কম্পিউটারের ব্যবহার

কম্পিউটার কি??
কম্পিউটারের ইতিহাস জানার আগে একটু ধারণা নি কম্পিউটার সম্পর্কে। Computer শব্দটি গ্রিক শব্দ Compute শব্দ থেকে এসেছে। Compute  শব্দের অর্থ গণনা করা। Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। মূলতঃ এটি তৈরি করা হয়েছিল গণনার জন্য। কিন্তু বর্তমানে এটি জটিল ও কঠিন হিসাব-নিকাশ ছাড়াও আরো অনেক কাজে ব্যবহার হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটারের কাজের গতি হিসেব করা হয় ন্যানো সেকেন্ডে। ন্যানো সেকেন্ড হল এক সেকেন্ডের একশ কোটি ভাগের একভাগ। ইলেকট্রনিক প্রবাহের মাধ্যমে এটি তার যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে।আপনাদের আরো ভালোভাবে বোঝানোর জন্য আমি আমার নিজের থেকে একটা উদাহরন দিচ্ছি তাহলে আপনারা আরও খুব সহজ ভাবে কম্পিউটার সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। কম্পিউটারকে আমরা অনেকটা নতুন একটা বাসা বাড়ি বা apartment হিসেবে ধরতে পারি,  এপার্টমেন্টে কিনার সময় বিক্রেতা আপনাকে শুধু খালি একটা বাসার চাবি ধরিয়ে দিবে,হয়তো ভিতরে খুব বেশি হলে একটা টিউব লাইট ও সামান্ন কিছু নামমাত্র আসবাবপত্র পাবেন।এখন আপনার নতুন বাসা সাজানোর দায়িত্ব আপনার । আপনি চাইলে লাখ টাকার আলমারি বা ১ হাজার টাকার আলমারি ,এলসিডি টিভি বা সাদাকালো টিভি, ফ্যান লাগাবেন না এসি লাগাবেন, এককথায় কি করবেন না করবেন সব আপনার ইচ্ছা। তবে এখানে একটা জিনিস সত্যি আপনি যত ভালো ভালো ও বেশী বেশী জিনিস দিয়ে সাজাবেন আপনার ঘর ততবেশি আপনার চাহিদা মিটাতে ও আরাম   দিতে সক্ষম।এখন যদি আপনি অল্পতেই সুখী হন, বা অল্পকিছু আসবাবপত্রই আপনার চাহিদা পূরণ করতে পারে সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যপার।
ঠিক কম্পিউটারও অনেকটা সেই রকম আপণী বাজার থেকে কম্পিউটার কিনার সময় বিক্রেতা আপনার কাছে বিক্রি করার পর তার দায়িত্ব শেষ, তারা হয়ত নামমাত্র কিছু প্রোগ্রাম ও সফটওয়্যার ইনস্টল করে দিবে, কিন্তু বাসায় আনার পর তাকে আপনাকেই নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে হবে। আপনার চাহিদা মতো প্রোগ্রাম দিয়ে সাজাতে হবে আর ভালো ফল পেতে এর ভিতর ভালো ভালো ও নাম করা সব সফটওয়্যার ইনস্টল করাতে হবে।যাক অনেক বেশী বক বক করে ফেললাম।এবার কম্পিউটারের ইতিহাস নিয়ে কিছু কথা ।
০২- কম্পিউটারের ইতিহাস।
মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন, দিয়েছেন তাদের মাথায় কিছু বুদ্ধি।মানুষ সাধনা করে তার বুদ্ধির মাধ্যমে বিভন্ন জিনিস আবিষ্কার করেছে। বর্তমান যুগ কম্পিউটারের যুগ। এখন আপনাকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কম্পিউটার আবিষ্কার কে করেছেন? তাহলে আপনি এর উত্তর কি দিবেন? কারণ আজকের এই কম্পিউটার একজনের হাত ধরে আসেনি। এটি এসেছে অনেক অনেক মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। এর জন্যই আপনাকে জানতে হবে এর প্রথম দিক থেকে।ইতিহাস থেকে যা জানা গেছে তা হল, প্রায় ৪ হাজার বছর আগে চীনারা গণনা করার জন্য একটি যন্ত্র তৈরি করে। যার নাম ছিল অ্যাবাকাস।এটিই হল পৃথিবীর প্রথম গণনাকারী যন্ত্র। আর এটিই হল বর্তমান কম্পিউটারের পূর্বপুরুষ।
০৩- কম্পিউটার কি ভাবে কাজ করে।
কম্পিউটার  সাধারণত দুইটি মাধ্যমের সমন্বয়ে কাজ সম্পাদন করে থাকেঃ
১- হার্ডওয়্যার
২- সফটওয়্যার
কম্পিউটারের বিভিন্ন যান্ত্রিক অংশ যেমন গ্রহনমুখ, নির্গমমুখ, কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ প্রভৃতিকে একত্রে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার (Hardware)বা যান্ত্রিকসরঞ্জ্রাম বলা হয়।  হার্ডওয়্যারের কার্যক্ষমতাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রোগ্রামের দরকার হয়। কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রোগ্রামসমূহকে সামগ্রিকভাবে সফটওয়্যার (Software) বা প্রোগ্রামসামগ্রী বলা হয়। সুতরাং একটি কম্পিউটার হল  হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর যৌথ সমন্বয়।অর্থাৎ প্রোগ্রামসামগ্রী ও যান্ত্রিকসরঞ্জ্রাম একে অপরের পরিপূরক।

০৪- কম্পিউটারের ব্যবহার 
যদিও কম্পিউটারের শুরু গনন যন্ত্র হিসাবে এবং জটিল অংক ও হিসাব কসার কাজে সাহায্য করার জন্য; বর্তমান মানব জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। কম্পিউটার কি কাজে ব্যবহার হয় সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং জিজ্ঞাসা করা যায় কি কাজে ব্যবহার হয় না তাহলে উত্তর দেওয়াটা সহজ। কম্পিউটার ছাড়া উন্নত বেবস্থাপনা,উৎপাদন,গবেষণা,টেলিযোগাযোগ, প্রকাশনা কল্পনা করা যায় না। কম্পিউটারকে ব্যবহার করা যায় সকল কাজে সকল স্থানে। মুলতঃ মানুষ তার কাজের উন্নয়নের জন্য কম্পিউটারকে কাজে লাগায়। এর ব্যবহারে প্রতিটি কাজ হয়ে পড়ে নির্ভর ও গতিশীল। তাই দিন দিন কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েই চলছে। নিচে কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরণের ব্যবহার উল্লেখিত হলঃ-
  • অফিস বেবস্থাপনা (In office Management)
  • শিল্প ক্ষেত্রে (In Industry Sector)
  • মুদ্রণ শিল্পে (In Printing Industry)
  • যোগাযোগ ব্যবস্থায় (In Communication)
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে (In Medical Sector)
  • গবেষণায় (In Research)
  • ব্যাংকিং জগতে (In Banking)
  • আদালত (In Court)
  • সামরিক ক্ষেত্রে (In Defence Sector)
  • অর্থবাজারে (In Billing System)
  • কৃষি ক্ষেত্রে (In Agriculture)
  • সংস্কৃতি ও বিনোদনে (In Cultures and Recreation)
  • তথ্য পরিসংখ্যানে (In Information Statistics)
  • ডিজাইনে (In Design)
  • আবহাওয়ার পূর্বাভাসে  (In Weather Forecast)
এক কথায় কম্পিউটার ব্যবহৃত হয় সর্বত্র। আমাদের জীবন যাত্রা কম্পিউটার ভিত্তিক। বাসার পড়ার ঘর, ভিডিও লাইব্রেরী,অফিস,ডিপার্টমেন্ট সেন্টার ও হোটেল থেকে শুরু’ করে সর্ব খেত্তে কম্পিউটার ব্যবহার দিনকে দিন অবিশ্বাস্য গতিতে বেড়ে চলেছে।

কম্পিউটারের শ্রেণী বিভাগ :


আকৃতিগত দিক থেকে কম্পিউটারকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
ক. সুপার কম্পিউটার (super computer), খ. মেইনফ্রেম কম্পিউটার (mainframe computer), গ. মিনি কম্পিউটার (mini computer), ঘ. মাইক্রো কম্পিউটার (micro computer)।
ক. সুপার কম্পিউটার (super computer) : আকৃতিগত দিক থেকে সর্ববৃহত এই কম্পিউটারটিতে তথ্য সংরক্ষণ-তথ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুত গতিসম্পন্ন। এই কম্পিউটার সাধারণত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও বৃহত প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন-cray-1, cray x-mp, cyber-205.
খ. মেইনফ্রেম কম্পিউটার (mainframe computer) : সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ছোট তবুও অন্যান্য কম্পিউটারের চেয়ে বড় এ ধরণের কম্পিউটার একই সাথে অনেকগুলো গ্রহণ মুখ ও নির্গমন মুখ, সরঞ্জাম ও বিভিন্ন রকম সহায়ক স্মৃতির সাথে সংযোগ রক্ষা করে কাজ করে থাকে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানসমূহ এ ধরণের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। যেমন-univac1100/01, ibm 6120, ibm 4341, ncr n8370, data general cs30.
গ. মিনি কম্পিউটার (mini computer) : সবচেয়ে জনপ্রিয় এটি কম্পিউটারটি আকৃতিগত ছোট ও দামে সস্তা। অফিসিয়াল কাজ, খেলাধুলা ও এন্টারটেইনমেন্ট কাজে বহুল ব্যবহৃত। এ কম্পিউটারকে পিসি (personal computer) বলে। যেমন-ibm p.c, trs 80, apple 64.
ঘ. মাইক্রো কম্পিউটার (micro computer): মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটারকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
১. সুপার মাইক্রো (super micro)
২. ডেস্কটপ (desktop)
৩. ল্যাপটপ (laptop)
১. সুপার মাইক্রো (super micro) : সুপার মাইক্রো কম্পিউটার হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী মাইক্রো কম্পিউটার। এর অন্য নাম ওয়ার্ক ষ্টেশন। এই কম্পিউটারের ক্ষমতা যে কোন মিনি কম্পিউটারের কাছাকাছি হওয়ায় এগুলো মিনিফ্রেমের স্থান দখল করে নিচ্ছে।
২. ডেস্কটপ (desktop) : এটি সহজে ব্যবহার ও ডেস্কে স্থাপন করা যায়। যেমন-আইবিএম পিসি, এ্যাপল মেকিনটোশ।
৩. ল্যাপটপ (laptop) : ডেক্সটপ থেকে ছোট কম্পিউটারগুলো সহজে বহন ও ব্যবহার করা যায়। এটি lap (কোল) এর উপর top (উপর) রেথে কাজ করা যায়। ল্যাপটপ দুইশ্রেণীতে বিভক্ত। যেমন-নোট বুক (note book) ও পিডিএ (pda)।
নোট বুক (note book) : ছোট ডায়রী ও নোটবুক আকৃতির ল্যাপটপ। এগুলোকেও পাওয়ার বুক বলা হয়।
পিডিএ (pda) : সাবনোট বুক পিডিএ (personal digital assistance) এক ধরণের ল্যাপটপ।
আকৃতিগত দিক ছাড়াও গঠনগত দিক থেকে কম্পিউটারকে আরও তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন-১. ডিজিটাল কম্পিউটার (digital computer), ২. অ্যানালগ কম্পিউটার (analog computer), ৩. হাইব্রিড কম্পিউটার (hybrid computer)।
১. ডিজিটাল কম্পিউটার (digital computer) : এ ধরণের কম্পিউটার বর্ণ/অংক সংকেতের মাধ্যমে তথ্যগ্রহণ করে থাকে এবং ফলাফল প্রকাশ করে। এ কম্পিউটার নির্ভুলভাবে গাণিতিক ও যুক্তিগত কাজ করে সূক্ষ্মভাবে। 1 ও 0 বাইনারী সংখ্যার উপর নির্ভর করে উপাত্ত সংগ্রহ করে।
২. অ্যানালগ কম্পিউটার (analog computer) : এ কম্পিউটারে বর্ণ ও অংক সংকেতের পরিবর্তে এনালগ বৈদ্যুতিক সংকেত ব্যবহার করে। রোদ, তাপ, উত্তাপ, চাপ জন্য সৃষ্ট বৈদ্যুতিক তরঙ্গকে অ্যানালগ কম্পিউটার ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে এবং ফলাফল সাধারণ প্লটার দিয়ে অংকন করে। রাসায়নিক, পেট্রোলিয়াম ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
৩. হাইব্রিড কম্পিউটার (hybrid computer) : ডিজিটাল ও অ্যানালগ এ দুই ধরণের কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত কম্পিউটারকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে। বৈজ্ঞানিক সমাধানের জন্য হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।


শেয়ার করুন

0 মন্তব্য(গুলি):